তৃণমূলকে খোলাখুলি সমর্থন দেওয়ার কথা বলেছিলেন বিমল গুরুং। তারপর দেখা গিয়েছিল, জিটিএ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন বিনয় তামাং। অনেকে ভেবেছিলেন, পাহাড়ের রাজনীতিতে যুযুধান এই দুই নেতার সংঘাত শুরু হল বলে! কিন্তু গত পাঁচ-সাত মাসে তেমন তো কিছু হয়ইনি। উল্টে দেখা গেল শুক্রবার কলকাতায় এসে সরাসরি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন বিনয় তামাং।
তাঁর হাতে জোড়াফুলের পতাকা তুলে দিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং মলয় ঘটক। এদিন গুরুং প্রসঙ্গ উঠতেই বিনয় জানিয়ে দিলেন, ‘গুরুং তো আগেই তৃণমূলকে সমর্থনের কথা বলেছেন। আজ আমি দিদির দলে যোগ দিলাম। এবার আমরা দু’জনে মিলে একসঙ্গে কাজ করব।’ এদিন বিনয়ের সঙ্গেই যোগ দিয়েছেন পাহাড়ের আরএক নেতা রোহিত শর্মা। মাঝে বিনয়-বিমলের সাক্ষাত্ হয়েছিল। প্রসঙ্গত, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা থেকে আগেই ইস্তফা দিয়েছিলেন তামাং। ফলে গুরুং এবং তামাংয়ের যে দুই গোষ্ঠী ছিল তার অবসান হয়। ঘটনা হল, সামনেই জিটিএ নির্বাচন। তার আগেই তৃণমূলে যোগ দিলেন তামাং। তাকদায় ইনস্পেক্টর অমিতাভ মালিক খুনের পর থেকে বিমল গুরুং গা ঢাকা দিয়েছিলেন। তারপর ২০২০ সালের পঞ্চমীর দিন বিকেলে হঠাত্ কলকাতায় তাঁর আবির্ভাব হয়। যাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মামলা ছিল তাঁকেই আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ ওঠে শাসকদলের বিরুদ্ধে। বিরোধীরা বলেন, পাহাড়ে সেটিং করার জন্য একজন খুনিকে আশ্রয় দিয়েছে তৃণমূল। সেইসময়ে তামাংও ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। তবে বিনয় এবং অনিত থাপাকে নবান্নে ডেকে বোঝান স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর থেকে পাহাড়ে সঙ্ঘাত তো হয়ইনি উল্টে এদিন নতুন সমীকরণের আনুষ্ঠানিক সূত্রপাত হল।
তৃণমূলে যোগ দিয়ে বিনয় তামাং বলেন, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রধানমন্ত্রী পদে দেখতে চান। সেইসঙ্গে এও বলেন, তাঁরা আর পৃথক গোর্খাল্যান্ড চান না। তাঁদের চাহিদা পাহাড়ের উন্নয়ন। এদিন ব্রাত্য বসু বলেন, বিনয় তামাংয়ের তৃণমূলের যোগদান পাহাড় তো বটেই উত্তরবঙ্গের সমতলেও প্রভাব ফেলবে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আগামী দিনে কোচবিহার ও জলপাইগুড়িতেও বড় ভাঙনের মুখে পড়বে বিজেপি।