ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের ঐতিহ্য ঢোলগ্রামের বারুনি মেলাকে উৎসাহ তুঙ্গে। বাংলার সবচেয়ে প্রাচীনতম ও ঐতিহাসিক এই বারুনি মেলায় আজও অংশগ্রহণ করেন হাজার হাজার ভক্ত। জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বেরুবাড়ি সংলগ্ন কাটাতারের সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয় এই মেলা। মেলার প্রবেশ দ্বারে রয়েছে একটি বাঁশের সাঁকো।
এরপর রয়েছে ছোট বড় হাজার খানেক দোকান। বছর ১৪২ তম বর্ষের মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে এখানে।একসময় এই মেলায় অংশগ্রহণ করতেন দুই বাংলার মানুষ। তবে এখন কাঁটাতারের বেড়া থাকায় তা আর সম্ভব হয় না। যদিও উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মেলায় আসেন অসংখ্য ভক্ত। ভক্তদের বিশ্বাস ঢোলগ্রামের ওপর দিয়ে বয়ে চলা যমুনা নদীর উত্তরমুখী স্রোতে স্নান করা গঙ্গা স্নানের সমান। মানুষের বিশ্বাস এখানে স্নান করলে সমস্ত পাপ ধুয়ে মুছে পুণ্য অর্জন করা যায়।
সেই বিশ্বাস নিয়ে আজও হাজার হাজার ভক্ত এখানে বারুনি স্নান করতে আসেন। সাতদিনের এই মেলায় দিনকয়েক থেকে বাড়ি ফিরে যান তারা। এজন্য মেলায় রয়েছে দই চিড়ে সহ বিভিন্ন রকমের খাবারের দোকান। রাত যত বাড়ে মেলা ততই জমজমাট হয়ে ওঠে এখানে।
গঙ্গা হল পুণ্যদায়িনী। এটা আমরা সকলেই জানি। তাই আমরা সকলেই গঙ্গা স্নান করে থাকি পুণ্য লাভের আশায়। আবার বাঙালির সমস্ত পূজোতে গঙ্গা জল, গঙ্গা মাটি অবশ্য প্রয়োজনীয়। আর কিছু বিশেষ বিশেষ তিথিতে যদি গঙ্গা স্নান করা যায় তাহলে অনেক পুণ্য সঞ্চয় করা যায়।
এগুলি হল গঙ্গা স্নানের কি কি পুণ্যফল লাভ হয় তার কথা। এবার আপনাদের বলব অন্যান্য মাহাত্ম্যের কথা। যেমন গঙ্গা মন্ত্র উচ্চারন করে স্নান করলে সমস্ত রকম পাপ থেকে মুক্তি লাভ হয়। আর পাপীরা “গঙ্গা গঙ্গা” উচ্চারন করে স্নান করলে তাদের সমস্ত পাপ ধুয়ে ফেলতে পারে। তার স্থান হয় বৈকুন্ঠে। গঙ্গাতীরে ন্যায় বা অন্যায় প্রাণত্যাগকারী ব্যাক্তি তার স্বর্গলোক প্রাপ্ত হয়। আমাদের প্রাচীন পুরাণে গঙ্গাস্নানের মাহাত্ম্যের কথা অনেক লেখা আছে।
এমনকি গঙ্গার মাহাত্ম্যর কথা ভগবান শিব বলেছিলেন পার্বতীকে। আসুন তাহলে জেনে নিন কোন তিথিতে গঙ্গা স্নান করলে আপনার পুণ্য সঞ্চয় হবে এবং সেই বিশেষ তিথিতে গঙ্গাস্নানের মাহাত্ম্য।
বারুণী স্নান স্কন্দ পুরাণে লেখা আছে যে চৈত্রমাসের কৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিতে শতভিষা নক্ষত্র যোগ হলে সেই তিথি বারুণী নামে পরিচিত। এই তিথিতে স্নান করলে বহুশত সূর্যগ্রহনের জন্য গঙ্গাস্নানের যে ফল সেই ফল লাভ করা যায়। হিমালয় কন্যা গঙ্গার অপরনাম বারুণী।
বারুণী স্নান এখানে গঙ্গা স্নানেরই প্রতিরুপ।বাঙলা সনের প্রতি চৈত্র মাসের শতভিষা নক্ষত্রযুক্ত মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশীতে এই স্নান অনুষ্ঠিত হয়। শাস্ত্র মতে কোন বছর যদি ঐদিনটি শনিবার হয় তবে ঐ বারুণী স্নান অসাধারণত্ব লাভ করে মহা বারুণী স্নান রুপ লাভ করে।এই স্নান টি বস্তুত্ব হিন্দু ধর্মীয় একটি পূন্য স্নান উৎসব।জীব জগতের পঙ্কের মধ্যে পথ চলতে গিয়ে পাপাচারে পূর্ণ্,ক্লেদাক্ত মুনস্যকুল এই পূণ্য স্নানের মধ্যমে পাপ মুক্ত হয়। ভারত বাংলাদেশ