Today kolkata:- অগ্নিপথের ধাঁচেই এবার কর্মী নিয়োগের অপেক্ষায় কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক। এই তালিকায় আছে স্টেট ব্যাঙ্ক, ব্যাঙ্ক অব বরোদা-সহ কয়েকটি নাম। সুখের খবর, সেখানে চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ হচ্ছে অফিসার গ্রেড-এর কয়েকটি পদে। তার মধ্যে সাধারণের পাশাপাশি উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের একাংশও পড়ছেন। এদিকে কর্মী ইউনিয়নগুলির অভিযোগ, সব জায়গাতেই অগ্নিপথের মতো মডেল এনে কম টাকায় কাজ করিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে মোদী সরকার। আর এবার শুরু হয়েছে ব্যাংক শিল্পেও। সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের মতে, এভাবে বহু মেধাবী ছেলেমেয়ের কেরিয়ার অকালে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা। চুক্তি শেষ হওয়ার পরে কেউ কাজ না পেলে আর্থিক অনিশ্চয়তার মধ্যেও পড়ার আশঙ্কা থাকছে। কারণ, আর্থিকভাবে তাঁদের কোনও বাড়তি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না। উল্লেখ্য, জুনে সেনাবাহিনীতে চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগের কথা ঘোষণা করেছিল মোদী সরকার। এরপরই কেন্দ্রের সরকারের প্রকৃত উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রকল্পের বিরুদ্ধে সরব হন বিরোধীরা।
অগ্নিপথের বিরুদ্ধে একের পর এক জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। এবার প্রশ্ন উঠেছে ব্যাঙ্কে স্বল্পমেয়াদি ঠিকাভিত্তিক নিয়োগ নীতি নিয়েও। অনেকের মতে এর ফলে একাধিক সমস্যার সম্মুখীন হবেন কর্মীরা। যে সব পদে নিয়োগ করা হচ্ছে, তাতে বেতন এবং চাকরির মেয়াদ, দু’টিই আগে থেকে নির্দিষ্ট করে বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। ফলে তা বাড়ানোর কোনও প্রশ্নই নেই। দুই থেকে সাত বছরের চুক্তি করা হচ্ছে। মেয়াদ শেষ হলে তা নবীকরণ হবে কি না, সেটা নির্ভর করবে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের ইচ্ছের উপরে। সূত্র মারফত এও খবর, বেতনের বাইরে তেমন কোনও আর্থিক সুবিধার বন্দোবস্তও নেই। কাজের জন্য কোনও কর্মীকে কয়েক দিনের জন্য বাইরে পাঠানো হলে তাঁকে যাওয়া আসার ভাড়া এবং নির্দিষ্ট হারে ভাতা দেওয়া হবে। তবে চুক্তিতে নিযুক্ত অফিসারেরা পেনশন বা গ্র্যাচুইটি পাবেন না। একথা স্পষ্ট জানিয়েছে ব্যাঙ্ক শিল্পের ইউনিয়নগুলি। ফলে যাঁরা চুক্তি শেষে কাজ থেকে বাদ পড়বেন, তাঁদের অন্য কোথাও চাকরি খুঁজে নিতে হবে। নয়তো অবসর নিয়ে বাড়িতে বসে থাকতে হবে।
অগ্নিপথের ধাঁচে একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে শুরু চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ।
National Congress মমতার দিল্লি সফরের সময়েই বড়সড় পরিকল্পনা কংগ্রেসের।
তাই সবকিছু বিচার বিবেচনা করে ব্যাঙ্ক ইউনিয়নগুলি ইতিমধ্যেই এই ধরনের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছে। এ বিষয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক অফিসার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় দাস বলেন, “নিয়োগের এই নতুন মডেলে অনেক কম টাকায় কাজ করিয়ে নিতে চাইছে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। ওই সব অফিসারদের পেনশন দেওয়ার দায়ও ঘাড় থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারবে সরকার।’’ একই মতামত পোষন করেছেন ব্যাঙ্ক শিল্পের বিভিন্ন ইউনিয়নের যৌথ মঞ্চ ইউএফবিইউ-র আহ্বায়ক গৌতম নিয়োগী। তাঁর কথায়, “প্রতিরক্ষার অগ্নিপথ প্রকল্পের ধাঁচেই ব্যাঙ্ক শিল্পে নিয়োগের পরিকল্পনা করেছে সরকার। বহু কর্মী এর মাসুল গুনবেন।’’ আক্ষেপের সুরে একথাই জানিয়েছেন তিনি। এর পাশাপাশি ব্যাঙ্ক অফিসারদের অপর এক সংগঠন আইবকের রাজ্য সম্পাদক শুভজ্যোতি চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ব্যাঙ্কে এই ধরনের স্বল্পমেয়াদি ঠিকা নিয়োগের তীব্র প্রতিবাদ করছি।
এটা সর্বনাশ ডেকে আনবে দেশে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন সংসদে বলেছেন যে, ব্যাঙ্ক শিল্পে কর্মী এবং অফিসার মিলে ৪১ হাজারেরও বেশি পদ খালি আছে। কিন্তু ওই সব পদে নিয়োগের কোনও পরিকল্পনা তাঁরা তৈরি করেননি। এর পেছনে সরকারের মদত আছে। রাজকোষের খরচ বাঁচানোর চেষ্টা চলছে সর্বত্র।’’ এই পরিকল্পনা কার্যকর হলে গ্রাহক পরিষেবা ব্যাহত হতে বাধ্য বলে মন্তব্য করেছেন ব্যাঙ্ক কর্মীদের সংগঠন এআইবিইএ-র সভাপতি রাজেন নাগর।