Today Kolkata:- এজেন্সির সক্রিয় নিয়ে মোদিকে চিঠি দিল তৃণমূল সহ ৯ বিরোধী দল। এজেন্সির সক্রিয়তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এই চিঠিতে সাম্প্রতিক একাধিক বিষয় নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। চিঠিতে লেখা হয়েছে যে বিরোধী নেতারা বিজেপিতে যোগদান করছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত ধীর গতিতে চলছে। বেছে বেছে নিশানা করা হচ্ছে বিরোধীদের। যার ফলে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।
এছাড়া অবিজেপি রাজ্যগুলিতে রাজ্যপালের কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা করা হয়েছে চিঠিতে। বলা হয়েছে, রাজ্যপালরা কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির মধ্যে ক্রমবর্ধমান বিভেদ সৃষ্টি করছেন। শুধু তাই নয় স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়ার বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় এজেন্সির পদক্ষেপকে। চিঠিতে লেখা হয়েছে, দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর দিল্লির ডেপুটি সিএম মণীশ সিসোদিয়াকে সিবিআই গ্রেফতারর করে। গ্রেফতারের সময় তার বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ দেখান হয়নি।
মনীশ সিসোদিয়ার গ্রেফতারি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে ‘গণতন্ত্রের স্বৈরাচারে ব্যবস্থাকে’। ২০১৪ সাল থেকে যেসব নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তাদের বেশির ভাগই বিরোধী দলের।প্রতিহিংসার রাজনীতি করে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে আর তার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। ইডি, সিবিআই-এর মত এজেন্সিগুলিকে দিয়ে বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতা নেত্রীদের হেনস্থা করা হচ্ছে।
দেশের প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদিকে এই নিয়ে চিঠি দিল তৃণমূল সহ ৯ বিরোধী রাজনৈতিক দল। তৃণমূল নেত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি রয়েছেন, আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল, ভারত রাষ্ট্র সমিতির প্রধান চন্দ্রশেখর রাও, এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারের মতো নেতারা।উল্লেখ্য, মণীশ সিসোদিয়াকে তো বটেই অবিজেপি রাজ্যে কেন্দ্রীয় এজেন্সির প্রতিহিংসা মূলক আচরণের আরো একটি নমুনা সাম্প্রতিক ছত্রিশগড়।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি ছত্তিশগড়ের কয়লা লেভি কেলেঙ্কারিতে বড় পদক্ষেপ নিয়েছিল। কেলেঙ্কারিতে অর্থ পাচারের তদন্তে ইডি, কংগ্রেস কোষাধ্যক্ষ, বিধায়ক এবং অন্যান্য নেতাদের বাড়িতে হানা দেয়। এই অভিযানগুলি এমন এক সময়ে হয়েছিল যখন ২৪-২৬ ফেব্রুয়ারি ছত্তিশগড়ের রায়পুরে কংগ্রেস পার্টির সাধারণ সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। ইডি এক ডজনেরও বেশি জায়গায় হানা দেয়। এর মধ্যে একাধিক কংগ্রেস নেতার বাড়িও ছিল তালিকায়।
আরও পড়ুন – Recruitment scam নিয়োগ দুর্নীতির টাকা সাদা করার কৌশলে ব্যবসায় বিনিয়োগ? সন্দেহ প্রকাশ ইডি কর্তাদের।
উল্লেখ্য,প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে লেখা চিঠিতে সই করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ভারত রাষ্ট্র সমিতি প্রধান চন্দ্রশেখর রাও, জম্মু এবং কাশ্মীর ন্যাশনাল কনফারেন্স প্রধান ফারুক আবদুল্লা, ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির প্রধান শরদ পাওয়ার, শিবসেনা নেতা উদ্ধব ঠাকরে এবং নয়াদিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। প্রত্যেকের একই অভিযোগ, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে এমনভাবে অপব্যবহার করা হচ্ছে যার ফলে তাঁদের ভাবমূর্তি এবং নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
মমতা–সহ বিরোধী নেতাদের অভিযোগ, ২০১৪ সালে বিজেপি কেন্দ্রের ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সিবিআই–ইডি এবং আয়কর দফতর দিয়ে রাজনীতিকদের বাড়িতে হানা দেওয়া হচ্ছে। মামলা পর্যন্ত দায়ের করা হচ্ছে। গ্রেফতার করা হচ্ছে। আবার কোনও নেতা বিরোধী দলে থাকাকালীন মামলা করা হচ্ছে। আর তিনিই বিজেপিতে যোগ দিলে তা বন্ধ হয়ে যায়। উদাহরণ হিসাবে চিঠিতে তুলে ধরা হয়েছে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা, শুভেন্দু অধিকারী, মুকুল রায়ের কথাও।
চিঠিতে লেখা হয়েছে মন্ত্রী মণীস সিসোদিয়ার কথাও।কেন এদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে? সারদা চিটফান্ড মামলায় হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করে। কিন্তু তিনি বিজেপিতে যোগ দিতেই ইডি–সিবিআইয়ের মামলার গতি শ্লথ হয়ে যায়। একই ঘটনা ঘটেছে শুভেন্দু অধিকারী, মুকুল রায়কে নিয়েও। নারদ কাণ্ডে ইডি–সিবিআইয়ের স্ক্যানারে ছিলেন তাঁরা। কিন্তু একুশের বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত থমকে গিয়েছে তদন্ত। এখন দেখার প্রধানমন্ত্রী কি করেন।