৬ মাস পর খুলল হুগলির কেশরাম রেয়ন কারখানা। কৃত্রিম সুতো তৈরির কারখানাটি বিভিন্ন কারণে বন্ধ ছিল। হুগলির কুন্তীঘাট এলাকায় অবস্থিত এই কারখানাটি বিড়লা গোষ্ঠীর। গত ২২ জুন কারখানায় সাসপেনশন নোটিশ টানিয়ে দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। তারজেরে কারখানার শ্রমিকরা কর্মহীন হয়ে পড়েন। তবে পুনরায় কারখানা খোলায় প্রায় ৩ হাজার শ্রমিকের মুখে আবার হাসি ফুটেছে।
বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে কারখানার শ্রমিকরা সেখানে আন্দোলন চালাচ্ছিলেন। এরপরে কারখানা কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বন্ধের নোটিশ দেওয়া হয়। করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘ লকডাউনের ফলে এমনিতেই মানুষের হাতে অর্থ কম রয়েছে। তার ওপর কর্মীরা কর্মহীন হয়ে পড়ায় স্বাভাবিকভাবেই তাদের অবস্থা বেহাল হয়ে পড়ে।
জানা গিয়েছে, কারখানার পাঁচটি শ্রমিক ইউনিয়নের শর্ত মেনে পুনরায় খুলেছে হলদিয়া রেয়ন কারখানা। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য ছিল, ৪৫ বছরের ঊর্ধ্বে শ্রমিকরা ঠিক মতো কাজ করতে পারেন না। তাই তাদের শর্ত ছিল ৪৫ বছর বয়স পেরিয়ে যাওয়া শ্রমিকদের স্বেচ্ছা অবসর নিতে হবে। অবসর নেয়ার সময় এককালীন শ্রমিকদের তিন লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা জানিয়েছিল কারখানা কর্তৃপক্ষ। তা নিয়েই শুরু হয়েছিল শ্রমিক অসন্তোষ। দফায় দফায় আন্দোলন করেন শ্রমিকরা। তারা কতৃপক্ষকে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানায়। কিন্তু তারপরেও কারখানা কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করায় শ্রমিক আন্দোলন অব্যাহত থাকে। অবশেষে কারখানার গেটে তালা ঝুলিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ।
রাজ্যের শ্রমদফতরেও এ নিয়ে আলোচনা হয়। শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্না দুপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন। কারখানা কর্তৃপক্ষকে গেট খুলে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন মন্ত্রী। শেষ পর্যন্ত কারখানার দরজা খুলল। শ্রমিক পক্ষের সঙ্গে মালিকপক্ষের বৈঠক হয়েছে। সেখানে শ্রমিকদের স্বেচ্ছা অবসরের সময়সীমা ৪৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ৫৩ বছর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সেইসঙ্গে, এককালীন টাকার পরিমাণও বাড়িয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। তবে ৫৮ বছর পর অবসর নিলে সে ক্ষেত্রে শ্রমিকদের এককালীন ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অন্যদিকে, ৫৩ বছর বয়সের নিচে শ্রমিকরা অবসর হলে সে ক্ষেত্রে তাকে সাত লক্ষ টাকা দেওয়ার পাশাপাশি নমিনি দেওয়া হবে বলেও ঠিক হয়েছে বৈঠকে।
এছাড়াও শ্রমিকরা অন্য লোকেদের কাজে ঢোকাতে পারবেন বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই সমস্ত কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেই খুলে দেওয়া হয়েছে হলদিয়ার রেয়ন কারখানা।