Today Kolkata:- ধর্মঘটের দিন বিদ্যালয়ে গড় হাজির তৃণমূল নেতারা, রিপোর্ট বেরতোই তৃণমূলের অন্দরেই শোরগোল, চাপে পড়ে কমিউটেড লিভ-এর দোহাই তৃণমূল নেতার। উল্লেখ্য,গত ১০-ই মার্চ বকেয়া ডি.এ সহ একাধিক দাবীতে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের ডাকে ছিল ধর্মঘট। ধর্মঘটকে বানচাল করতে জারি হয়েছিল সরকারি নির্দেশ। এমনকি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার একাধিক জায়গায় ধর্মঘটের বিরোধিতায় আসরে নেমেছিল রাজ্যের শাসক দলের একাধিক সংগঠনকেও।
ধর্মঘটের দিন কর্মস্থলে কারা কারা উপস্থিত বা অনুপস্থিত তা জানতে সরকারিভাবে চাওয়া হয়েছিল রিপোর্ট। যদিওবা ধর্মঘটের দিন উপস্থিতির রিপোর্ট দপ্তরে আসতেই অসস্বস্তি বেড়েছে খোদ রাজ্যের শাসক দলের সংগঠনগুলির। সূত্র মারফৎ খবর ১০-ই মার্চ ধর্মঘটের দিন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার একাধিক তৃণমূল শিক্ষক নেতার স্কুল-ই ছিল পুরোপুরো তালাবন্ধ৷ সূত্র মারফৎ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী প্রাথমিকভাবে জানা গেছে তৃণমূলের পক্ষ থেকে ধর্মঘটের বিপক্ষে প্রচার চালানো সত্বেও স্কুলমুখো হননি তৃণমূলের শিক্ষক নেতা-কর্মীরাই।
জানা গেছে গত ১০-ই মার্চ কুশমন্ডি পূর্ব চক্র অধীনস্থ সরাইহাট প্রাথমিক অবৈতনিক বিদ্যালয় ছিল পুরোপুরি তালাবন্ধ। এমনকি ঐ বিদ্যালয়ের প্রাথমিক শিক্ষক তথা কুশমন্ডি ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ সরকার নিজেও বিদ্যালয় মুখো হননি। যদিও ধর্মঘটের দিন বিদ্যালয়ের অনুপস্থিতির রিপোর্ট জেলায় পৌছাতেই সুর বদল পেশায় শিক্ষক তৃণমূল নেতা অভিজিৎ সরকার কমিউটেড লিভ-এর দোহাই দেন।
অভিজিৎ সরকার বলেন অভিজিৎ সরকার বলেন আমি একমাস কমিউটেট লিভে-এ আছি, আমার এস.আই জানে, খাতাতে লেখা রয়েছে, র্ড এস.আই-কে জানানো হয়েছে। শুধু তাই নয় তিনি এও দাবী করেন তার অনুপস্থিতির রিপোর্ট ভুল রিপোর্ট। তিনি এও বলেন তার কাছে কমিউটেড লিভের অনুমতি রয়েছে। যদিও কুশমন্ডি পূর্ব চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক সাফিয়ার রহমান স্পষ্ট জানান ঐ স্কুলে কোন শিক্ষিক-শিক্ষিকা কোন ছুটিতে ছিলেন না, তারা অনুপস্থিত দেখিয়েছে। তিনি বলেন রিপোর্ট জেলায় পাঠানো হয়েছে। আবার তপন পূর্ব চক্র অধীনস্থ অর্জুনপুর অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়-ও ছিল ধর্মঘটের দিন পুরোপুরি তালাবন্ধ।
ঐ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শরিফ মহম্মদ সরকার পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা কমিটির সদস্য এবং ঐ বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকরাও রাজ্যের শাসক দলের শিক্ষক সংগঠনের সদস্য। ধর্মঘটের দিন রাজ্যের শাসক দলের শিক্ষক সংগঠনের নেতা-কর্মীদের অনুপস্থিতির রিপোর্ট জেলার সংশ্লিষ্ট জেলা দপ্তরে পৌছাতেই শোরগোল পড়ে গেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায়। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে তবে কি তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-এর নির্দেশে সমর্থন নেই তৃণমূল ও তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের নেতা-কর্মীদের।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি সুকলাল হাসদা বলেন আমাদের মধ্যে কিছু দোচালা লোক ঢুকে রয়েছে, তারা আদৌও আমাদের দল করে না, শুধু মেম্বারশিপ নিয়ে রয়েছে, তারা ভিতরে ভিতরে বিরোধী সংগঠনের সাথে যুক্ত রয়েছে। এটা প্রকাশ হয়ে গেল কারা কারা আমাদের সংগঠনে থেকে বিরোধীদের সহযোগীতা করছে। সুকলাল হাসদা-র বক্তব্য সরকারি আইনানুগ ব্যবস্থা হবে। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন তারা দলীয় সংগঠনের পক্ষ থেকেও ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। অপরদিকে ধর্মঘটের দিন রাজ্যের শাসক দলের শিক্ষক নেতাদের কর্মস্থলে গড় হাজিরা প্রসঙ্গে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার নিখিলবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সম্পাদক শংকর ঘোষ বলেন এটা আমাদের নৈতিক জয়।