সংখ্যালঘু অধ্যুষিত সে এলাকায় প্রেমের বিপ্লব ঘটিয়ে ফেলা এই ছাত্রীর প্রতি সহমর্মিতা যত না আছে তার থেকে বেশি উঠছে আঙুল। ‘তুমি কেন সংযম হওনি।’ তাই প্রেমিকের বাড়ির সামনে বিয়ের দাবি নিয়ে ধর্নায় বসলেও তাঁর পাশে কার্যত কেউই এসে দাঁড়ায়নি। না এলাকাবাসী, না পাড়াপ্রতিবেশী, না আত্মীয়স্বজন, না বন্ধুবান্ধব। সকলেরই এক কথা, ‘ছেলেরা এমনই হয়, তুমি কেন নিজেকে আগলে রাখোনি।’ ঘটনার নেপথ্যে ডোমকলের শেখালিপাড়ার বাসিন্দা আব্বাসউদ্দিন, যার বাড়ির সামনে বিয়ের দাবি নিয়ে বৃহস্পতিবার রাত থেকে ধর্নায় বসেছে কলেজছাত্রী জুলেখা। জানা গিয়েছে, আব্বাসের সঙ্গে জুলেখার সম্পর্ক প্রায় ৩ বছরের। প্রথম থেকেই এই সম্পর্ক নিয়ে দুই বাড়িতেই আপত্তি ছিল। কিন্তু সেই আপত্তি প্রেমের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। প্রেমের জল গড়িয়েছে বিছানাতেও। নিয়মিত শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়েছে দুইজনই। কিন্তু কিছুদিন আগেই জুলেখা জানতে পারে আব্বাসের বাড়ির লোকেরা তাঁর অন্য হায়গায় বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে। শোনামাত্রই আর ঘরে বসে থাকেনি জুলেখা। সোজা চলে এসেছে আব্বাসের বাড়িতে। বৃহস্পতিবার বিকেলে আব্বাসের বাড়িতে হাজির হয় জুলেখা। সোজা ঢুকে পড়ার চেষ্টা করে আব্বাসের বাড়িতে। কিন্তু তা মেনে নেয়নি আব্বাসের বাড়ির লোকেরা। উল্টে জুলেখাকেই তাঁরা মারধর করে বাড়ির বাইরে বার করে দেয়।
তারপরই আব্বাসের বাড়ির সামনে গতকাল রাত থেকেই পোস্টার হাতে ধর্নায় বসে পড়েছে জুলেখা। পোস্টারে লেখা, ‘বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিন বছর ধরে সব সম্পর্ক করে এখন অন্য মেয়েকে বিয়ে করবে। আমাকে বিয়ে করুক না হয় মেরে ফেলুক। না হলে আমি আত্মহত্যা করব।’ এই পোস্টার হাতে জুলেখাকে ধর্নায় বসতে দেখে আব্বাসের বাড়ির সামনে ভিড় জমিয়েছেন অনেকেই। কিন্তু তাঁদের কেউই নেই জুলেখার সঙ্গে। বরঞ্চ গোঁড়া রক্ষণশীল সমাজ আঙুল তুলেছে জুলেখারই দিকে, ‘তুমি কেন নিজেকে আগলে রাখোনি।’ সব দায় যে শুধু মেয়েদেরই। গোটা বিষয়টি নিয়ে এখনও পর্যন্ত সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খোলেনি আব্বাসের পরিবার।