নাগাল্যান্ডের ঘটনায় ক্রমশ উদ্বেগ বাড়ছে। ঘটনায় ইতিমধ্যে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাধারণ নাগা যুবকদের উপর গুলি চালানোর ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিও জানানো হয়েছে। কিন্তু এরপরেও উত্তেজনা নাগাল্যান্ডে।বিশেষ করে মন গ্রামে লাগাতার আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সেখানকার মানুষরা।
AFSPA তুলতেই হবে! মোদী সরকারকে চিঠি নাগাল্যান্ডের বিজেপির ‘জোটসঙ্গী’ মুখ্যমন্ত্রীর
বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে রাস্তা। মন জেলাজুড়ে এখন শুধুই চাপা টেনশন এবং একটা থমথমে পরিস্থিতি। আর এই অবস্থায় AFSPA নিয়ে চাপ বাড়ছে কেন্দ্রীয় সরকারের উপর।
গুলি চালানোর পরেই আজ বুধবার নাগাল্যান্ডে মন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠকে বসেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। নাগাল্যান্ডের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে একাধিক বিষয়ে আলোচনা হয়। আগামিদিনে কীভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব তা নিয়ে আলোচনা হয় মন্ত্রীদের। আর মন্ত্রিসভার বৈঠকেই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী AFSPA, 1958 তুলে নেওয়ার জন্যে কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানানো হবে। উত্তেজনাপূর্ণ এলাকাগুলিতে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্যে ভারতীয় সেনাকে বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। আর তা হল Armed Forces Special Powers Act-আর সেটা তুলে নেওয়ার জন্যে আবেদন জানানো হবে বলে সিদ্ধান্ত নাগাল্যান্ড মন্ত্রিসভাতে।
এই বিষয়ে খুব শিঘ্র মোদী সরকারকে চিঠি লিখতে চলেছে নাগাল্যান্ড সরকার। ঘটনার পর থেকেই AFSPA তুলে নেওয়ার জন্যে আওয়াজ উঠছে। এমনকি খোদ বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরাও এই বিষয়ে আওয়াজ তুলতে শুরু করেছেন। গুলি চালানোর পরেই বিজেপিশাসিত মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রীও AFSPA তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনার পরেই নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী নেফিও রিও জানান, আমরা কেন্দ্রের কাছে বিতর্কিত AFSPA তুলে নেওয়ার আবেদন জানাবো। আমার রাজ্যে অশান্তির কারণ হয়ে উঠছে আফস্পা, মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রীর। ফলে ঘরে-বাইরে চাপের মুখে মোদী সরকার।
অন্যদিকে এই অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে দিল্লিতে তলব করা হল মুখ্যমন্ত্রীকে। সোমবার রাতেই জরুরি ভিত্তিতে তলব করা হয়েছে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে। তবে ঠিক কি কারনে তলব করা হয়েছে তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। জানা যাচ্ছে, আজই সম্ভবত দিল্লি উড়ে যেতে পারেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, নাগাল্যাণ্ডে নাগা যুবকদের উপর নির্বিচারে গুলি চালানোর ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলি। ঘটনার প্রতিশোধ নেওয়ার হুশিয়ারি। বলে রাখা প্রয়োজন, মন যে জেলাতে এই ঘটনা ঘটেছে সেখানে খাপলাং জঙ্গি গোষ্ঠীর এক প্রভাব রয়েছে। ওই এলাকায় মায়ানমার সীমান্ত সংলগ্ন হওয়াতে আরও জটিলতা তৈরি হয়েছে।
ঘটনার পরেই সেনা কিংবা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে যে তথ্য দেওয়া হয়েছে তাতে বলা হয়েছে জঙ্গি কার্যকলাপ হতে পারে এমন গোয়েন্দা তিথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চলছিল। কিন্তু ভুল বোঝাবুঝিতে এই ঘটনা ঘটে যায় বলে দাবি করা হয়েছে। ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।