Today Kolkata:- North 24 Paraganas নদীর পাড়ে বাস, দুঃখ বারোমাস। এই কথা কার না অজানা। নদী পাড়ের বাসিন্দাদের মুখে মুখে ফেরে একথা। বিশেষত, বর্ষা মানেই তো ভয়। ফুলেফেঁপে ওঠে নদী। কখন যে বাঁধ ভাঙে কে বলতে পারে। তারপর মাঠ-ঘাট-পুকুর ভাসিয়ে গ্রামের ভেতরে ঢোকে জল। বাড়ি ভাঙে, পুকুরের মাছ থেকে গবাদি পশু ভাসিয়ে নিয়ে যায়। গ্রামর পর গ্রাম, লক্ষ লক্ষ মনুষকে জলবন্দি থাকতে হয়। তখন যাতায়াতের একমাত্র ভরসা নৌকা। তাই বন্যা এলাকার মানুষজন- সকলেই নৌকা বাইতে জানেন। তা ছেলে হোক বা বুড়ো। এমনকী, মেয়েরাও। বর্ষার সময় যখন নৌকা একমাত্র ভরসা তখন তো নৌকা রাখতেও হবে বাড়িতে। যদিও সব মানুষের পক্ষে তো বাড়িতে নৌকা রাখা সম্ভব নয়। মোটামুটি সম্পন্ন মানুষজন বাড়িতে নৌকা কিনে রাখেন। আর গরিব মানুষজন ডিঙি বানিয়ে নেন। তাই বর্ষা এলে নৌকার কারিগর ও ব্যবসায়ীরা একটু লাভের মুখ দেখে। তাঁরা তাকিয়ে থাকেন এই সময়টার দিকে।
যেমন তাকিয়ে রয়েছেন উত্তর দিনাজপুরের (North 24 Paraganas) রায়গঞ্জের শিল্পীরা। তাঁরা এখন চুড়ান্ত ব্যস্ত নৌকা তৈরিতে। রায়গঞ্জের রাজবিহারী মার্কেটে গেলে দেখা যাবে, নৌকা নির্মাতারা এখন দিনরাত এক করে কাজ করে চলেছেন।নৌকার কারিগর রতন সাহা বলেন, ‘‘এইটাই তো আমাদের সময়। বর্ষা আসার আগেই তো নৌকা তৈরির কাজ শেষ করে ফেলতে হবে। নাহলে যাঁরা অর্ডার দিয়েছেন তাঁরা বিপাকে পড়বেন। তাই এখন দম ফেলার ফুরসৎ নেই। ’’রায়গঞ্চ থেকে নৌকা যায় পাশের জেলা মালদা থেকে পাশের রাজ্য বিহার পর্যন্ত। উত্তর দিনাজপুরের মানুষও নৌকা কেনেন। বাংলাদেশ থেকেও কখনও সখনও অর্ডার আসে। একটি একটি নৌকার দামও কম নয়। সাধারণ মানের ছোট নৌকা যদি জাম কাঠের তৈরি হয় তাহলে তা প্রায় ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হয়। একটু বড় করলে ২০ হাজার পর্যন্ত হয়। এগুলি অবশ্য সাধারণ নৌকা। আবার যদি মাঝিরা বছরভর পারাপারের জন্য নৌকা বানান তাহলে তার দাম আরও বেশি। আর আম কাঠের নৌকার দাম অবশ্য তুলনায় কম।
North 24 Paraganas উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের শিল্পীরা এখন চুড়ান্ত ব্যস্ত নৌকা তৈরিতে।
প্লাস্টিক বর্জন সচেতনতায় আবারো রাস্তায় পৌর চেয়ারম্যান উত্তম কুন্ডু।
তা ৯ হাজার টাকাতেও মেলে। নৌকা বিক্রেতা। শিব শংকর সাহা। তাঁর কথায়, ‘‘মানুষ যেমনটি চান আমরা তেমনটি করে দিই। প্রতি বছরই অর্ডার আসে। তবে এটা নির্ভর করে কেমন বর্ষা হয়েছে তার ওপর। যদি টানা পরপর দু’বছর বেশি বন্যা হয় তাহলে পরেরবার বেশি নৌকা তৈরির অর্ডার আসে। আর যদি বর্ষায় বৃষ্টি কম হয়, বন্যা কম হয়, তাহলে আমাদের ব্যবসায় মন্দা। কারণ, তখন কে আর খৱচ করে নৌকা বানাবে।’’ আবার নৌকা মাঝ ধরার কাজেও ব্যবহৃত হয়। সে জন্যও অবশ্য জেলেরা কিছু নৌকা কিনে থাকেন। রায়গঞ্জের নৌকার সুনামও রয়ছে এলাকায়। কারণ, কারিগরদের মান উন্নত। দামও নাগালের মধ্যে। তাই নির্মাতারা এখন চুড়ান্ত ব্যস্ত। বর্ষা যে এলো বলে। তার আগেই নৌকা সুন্দর করে তৈরি করে তুলে দিতে হবে যে ক্রেতাদের হাতে।