Today Kolkata:- লক্ষ্য পঞ্চায়েত নির্বাচন,ঘুঁটি সাজাতে ব্যস্ত রহিম। তেইশে এ রাজ্যে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের ক্ষমতায় কারা? মহার্ঘ এই প্রশ্নেই এখন বাজার গরম। কিন্তু তেইশে গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে কে বাজিমাত করবে তা নিয়ে এখন থেকেই জোর ভাবনা চর্চা শুরু করেছে রাজনৈতিক দলগুলি। তৃণমূল কংগ্রেসের মালদহ জেলা সভাপতি দায়িত্ব পাওয়ার পর সাফল্যের সাথে পুরোভোট বৈতরণী পার করেছেন আবদূর রহিম বক্সী।
পঞ্চায়েত নির্বাচন নিঃসন্দেহে তার কাছে এক বড় চ্যালেঞ্জ। যদিও দুবারের বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সী তার অভিজ্ঞতার উপর ভর করে ইতিমধ্যেই ঘর গোছানোর কাজ শুরু করে দিয়েছেন। মালদহ জেলার ১৫টি ব্লকে ১৪৬ টি গ্রাম পঞ্চায়েত ১৫টি পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ। গত বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস মালদহ জেলায় ১২ টি আসনের মধ্যে আটটি আসনে জয়ী হয়।আব্দুর রহিম বক্সী এলাকায় বছর ভর চোষে বেড়াতেন তিনি, মূলত তার প্রচার কৌশলে ভর করে জেলায় পুরো ভোটে ব্যাপক সাফল্য লাভ করে তৃণমূল কংগ্রেস।
২১ এর নির্বাচনের পর তৃণমূল কংগ্রেস জেলায় ব্যাপক শক্তি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। বাম জমানায় মালতিপুরের বিধায়ক থাকাকালীন তিনি তার পুরনো দলের অন্যতম কান্ডারী ছিলেন যা রহিমের ট্রেডমার্ক হিসেবে ক্ষ্যাত। শুধুমাত্র নেতা-নেত্রী নির্ভর রাজনীতি না করে আমজনতার সঙ্গে সরাসরি জনসংযোগের রাস্তায় হেঁটেছেন রহিম। তুলনামূলক আলোচনা করলে দেখা যাবে বিগত পুরোভোটের পর তিনি একাই কার্যত চোষে বেরিয়েছেন গোটা জেলা। কথা বলেছেন সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে। ধৈর্য ধরে শুধু তাদের সমস্যার কথা শুনেই ক্ষান্ত থাকেননি। চেষ্টা করেছেন যথাসম্ভব সমস্যা সমাধান করার।
রহিম নিজে বিভিন্ন ব্লকে গিয়ে যতগুলি ছোট ছোট সভা বৈঠক করেছেন তা সাম্প্রতিক অতীতে কোন রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা করতে পেরেছেন কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। প্রাথমিক প্রস্তুতি হিসেবে দলের দুর্বলতা গুলি চিহ্নিত করে সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি প্রতিটি বিধানসভা ক্ষেত্রের জন্য আলাদা আলাদা রণকৌশল স্থির করে এগোচ্ছেন তিনি। কারণ বিগত বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল থেকেই পরিষ্কার জেলার বিভিন্ন বিধানসভায় ইসুও ছিল ভিন্ন। তাই প্রাথমিকভাবে ১২টি বিধানসভার ভিন্ন ভিন্ন ইস্যু ধরেই ঘর গোছানোর কাজ রহিম শুরু করেছেন ইতিমধ্যেই। ইতিমধ্যেই জেলার প্রতিটি ব্লকের ব্লক কমিটি ও অঞ্চল কমিটি ঘোষণা হয়েছে।
দলের সংগঠন মজবুত না হলে যে আখেরে তার ফল পঞ্চায়েত নির্বাচনে পরবে তা বুঝেই তৃণমূল স্তরের মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন দলের সব মাপের নেতা-নেত্রীকে। রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে যথাযথ মেলবন্ধনের কাজটিও ঠিকমতো হওয়াতেই সংগঠনের কাজকর্মে নিয়মাবর্তিতা ক্রমে স্পষ্ট হচ্ছে। জেলার প্রতিটি হেভিওয়েট নেতা নেত্রী কে এক ছাতার তলায় নিয়ে এসে দলের সংগঠন বিস্তার করে চলেছেন রহিম। শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে একেবারে তৃণমূল স্তরের নেতাকর্মীদের এক সুরে বেঁধে ফেলার কাজ ইতিমধ্যেই ফলপ্রসু হতে শুরু করেছে বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।
জেলায় বিজেপি বাম ও কংগ্রেসের মত দলগুলি যখন নানা ইস্যুকে নিয়ে বিরোধিতার চিন্তাভাবনা করছে তখন নিঃশব্দে সংগঠন মজবুত করাকেই পাখির চোখ করেছেন রহিম। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি সহ একাধিক ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভা করেছেন।তার মাঝেও জনসংযোগের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এতদিন ধরে প্রায় কর্মসূচিহীন পঞ্চায়েত ও ব্লক নেতাকর্মীদের নিয়মিত বৈঠক আলোচনা সভার মতো কর্মসূচির মাধ্যমে জনসংযোগ ও সংগঠনকে শক্ত ভীতের উপর দাঁড় করানোটাই মূল লক্ষ তার। বলাবাহুল্য অনেকটা দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঢংঙে বিরোধীদের পরাস্ত করার কৌশল জেলাতেও নিয়েছে তিনি।
বলা যায়,জেলার প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত ধরে ধরে যথাযথ রণকৌশল ঠিক করাতেই ভবিষ্যতের সাফল্য লুকিয়ে এমনটাই মনে করছেন রহিম বক্সী। এক একটি পঞ্চায়েতে এক একটি কৌশল অবলম্বন করলেই আসতে পারে সাফল্য। রহিম তা অনুধাবন করেছেন বলেই আপাতত তাতেই মজেছেন তিনি। ২০২৩ এর লক্ষ্যে চলছে নিরবে ঘুঁটি সাজানোর কাজ। মালদহ জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী বলেন, সংগঠনের উপর ভিত্তি করেই পঞ্চায়েত নির্বাচনে মালদহ জেলায় তৃণমূল কংগ্রেস সাফল্য লাভ করবে বলে আশাবাদী তিনি।